জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নয়নশীল দেশগুলোও দায়ী

বিশ্বব্যাপি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এতোদিন উন্নত দেশগুলােকে দায়ী করা হলেও এবারে সেই তালিকায় উঠে এসেছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নাম। তাই জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমানোর জন্য। একই সাথে তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে জার্মানির ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী বারবারা হ্যান্ড্রিকস বার্লিনে সংসদের নিম্নকক্ষ সভায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার জন্য কীভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো যায়, এ বিষয়ে পৃথিবীর সকল দেশকেই একসাথে কাজ করতে হবে ।

হ্যান্ড্রিকস উল্লেখ করেন, ১৯৯৭ সালে গৃহীত কিয়োটো প্রটোকল অনুযায়ী ২০০৫ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে।

কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। জরিপে দেখা যায়, গত ২ শতকে নিঃসৃত গ্রিনহাউস গ্যাসের ৮০ শতাংশই করেছে শিল্পোন্নত দেশগুলো। কিন্তু ২০১৪ সালে এই চিত্র ভিন্ন। দেখা গেছে যে নিঃসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের অর্ধেকেরও বেশি করছে উন্নয়নশীল দেশগুলো।

হ্যান্ড্রিকস আরো উল্লেখ করেন, বর্তমানে সবচাইতে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ করে চীন। আর ভারত রয়েছে এ তালিকার ৩য় স্থানে। এর থেকেই বুঝা যায় যে জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নয়নশীল দেশগুলোও ব্যাপকহারে প্রভাব ফেলছে। তাই শুধুমাত্র শিল্পোন্নত দেশগুলোকে এ ব্যাপারে দোষারোপ করার কোন মানে হয়না।

সবশেষে তিনি বলেন, যেসব দেশ জলবায়ুর পরিবর্তনে বেশি ভূমিকা পালন করছে সেসব দেশেরই উচিত এটা মোকাবেলায় বেশি পদক্ষেপ নেয়া।

এ মাসের শুরুতে পেরুর রাজধানী লিমায় অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি বলে অনেকেই এটাকে একটা ব্যর্থ সম্মেলন বলছেন। কিন্তু হ্যান্ড্রিকস সেটা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, এ সম্মেলন কোনভাবেই অসফল ছিল না এবং এখানে জার্মানির ভূমিকাও ছিল প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনার পদক্ষেপটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন